পশ্চিমারা জ্বালানি তেলের দর নির্ধারণ করে দিলেও লোকসানের পরিবর্তে উল্টো মুনাফা বেড়েছে রাশিয়ার। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রায় ৬ মাস গড়ালেও এখন পর্যন্ত জ্বালানি তেল বিক্রি করে মস্কোর মুনাফা ৬ হাজার কোটি ডলারের ওপরে। যদিও নিজেদের সিদ্ধান্তকে সফল হিসেবে দাবি করেছে জি সেভেন জোট।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর মস্কোর ওপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা দিতে থাকে পশ্চিমারা। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের জ্বালানি সরবরাহ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাশিয়া। এতে করে টালমাটাল হয়ে পড়ে জ্বালানির বাজার। দেশে দেশে দেখা দেয় জ্বালানি সংকট।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর পশ্চিমারা মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুরু করে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জ্বালানি সরবরাহ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ কারণে জ্বালানির বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশে জ্বালানি সংকট চলছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে, জি৭ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন অপরিশোধিত তেলের দাম ৬০ ডলার নির্ধারণ করে যাতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জন্য শক্তি বিক্রির লাভ ব্যবহার করতে না পারে। সম্প্রতি হিরোশিমায় অনুষ্ঠিত জি৭ বৈঠকে জোট নেতারা তাদের সিদ্ধান্তকে সফল বলে দাবি করেছেন। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা।
ফিনল্যান্ডের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ ইন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের প্রতিবেদন বলছে, গত এপ্রিলে বছরের ব্যবধানে জ্বালানি তেল বিক্রিতে ৬ শতাংশ মুনাফা বেড়েছে রাশিয়ার। মার্চেও মুনাফা ছিলো ৫ শতাংশ বেশি। এতে করে গত নভেম্বরে রাশিয়া জ্বালানি বিক্রিতে যে মুনাফা করেছিলো, তেলের মূল্য নির্ধারণের পরে সে পরিমাণ অর্থ তুলে আনতে সময় লাগলো মাত্র ৪ মাস।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সিদ্ধান্তটি কার্যকরের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার তেল বিক্রিতে মুনাফা পৌঁছেছে ৬ হাজার ২৫০ কোটি ডলারে।
সিআরইএ এর গবেষকরা বলছেন, প্রতিবেদনটির মাধ্যমেই বোঝা যাচ্ছে তেলের মূল্য নির্ধারণের কোনো সুফল আসেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দু মাস পর পর আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে রাশিয়ার তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন না করায় হীতে বিপরীত হয়েছে বলে মত তাদের।